সুদী লোন নিয়ে বাড়ি বানানো যাবে কি?
প্রশ্ন
আমার ফুফাতো ভাই আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান। তার বাবা ব্যাংক থেকে সুদী ঋণ নিয়ে বাড়ি করেছে ভাড়া দেওয়ার জন্য। ফুফাতো ভাই তার বাবাকে সুদী ঋণ নিতে নিষেধ করেও বিরত রাখতে পারেনি। তার বাবা বাড়ি তৈরি করার সময় তার থেকে বেশ কিছু টাকা ঋণ নিয়ে ঐ বাড়িতে কাজে লাগিয়েছে। এখন সে জানতে চাচ্ছে, ঐ বাড়ি থেকে প্রাপ্ত ভাড়া সে গ্রহণ করতে পারবে কি? সে কি ঐ বাড়িতে থাকতে পারবে? আর তার বাবার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে সে বাড়ি থেকে অংশ পেলে তা কি সে গ্রহণ করতে পারবে? যদি তার জন্য টাকা নেওয়া বৈধ না হয় তাহলে তার যে টাকা বাড়িতে বিনিয়োগ করা হয়েছে তা কি সে নিয়ে নিতে পারবে? উত্তর জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
সুদের ভিত্তিতে ঋণ নেওয়া-দেওয়া সম্পূর্ণ হারাম। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ.
আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। (সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭৫)
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللهِ وَ رَسُوْلِهٖ.
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা কিছু অবশিষ্ট আছে তা পরিত্যাগ করো। যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তা না কর তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের সংবাদ জেনে নাও। (সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭৮-২৭৯)
হাদিস শরিফে এসেছে, জাবের (রা.) বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقَالَ: هُمْ سَوَاءٌ.
‘রাসূলুল্লাহ (সা.) সুদ ভক্ষণকারী, সুদ প্রদানকারী, সুদের লেখক এবং সাক্ষীগণকে অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন, (গুনাহের ক্ষেত্রে) তারা সবাই বরাবর।’ সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৫৯৮)
সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ফুফাতো ভাইয়ের বাবার সুদী ঋণ নেওয়া হারাম হয়েছে। এখন তার কর্তব্য হল, অবিলম্বে ব্যাংকের সকল ঋণ পরিশোধ করে দেওয়া এবং আল্লাহ তাআলার কাছে তাওবা-ইস্তেগফার করা।
আর ঐ বাড়ি তৈরিতে যেহেতু তার ছেলের টাকা আছে এবং সে বাবাকে সুদী লোন নিতে নিষেধও করেছে তাই সুদী লোনের গুনাহ ঐ ছেলের উপর বর্তাবে না এবং ঐ বাড়ি থেকে প্রাপ্ত অংশে বসবাস করা এবং এর আয় গ্রহণ করা তার জন্য জায়েয হবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم