ইসলামে সহশিক্ষার বিধান
প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মেয়েদের ক্লাসে পুরুষ শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়া জায়েয আছে কি?(মেয়েরা পর্দা করে না)।উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে-মেয়ে এক স্থানে, এক রুমে পাশাপাশি বসে পড়াশোনা করে, সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অপারগ না হলে পড়াশোনা করা এবং শিক্ষকতা করা জায়েয নেই। এ ব্যাপারে আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা উত্তর দিয়েছেন,اختلاط الطلاب بالطالبات والمدرسين بالمدرسات في دور التعليم محرم لما يفضي إليه من الفتنة وإثارة الشهوة والوقوع في الفاحشة ، ويتضاعف الإثم وتعظم الجريمة إذا كشفت المدرسات أو التلميذات شيئاً من عوراتهن ، أو لبسن ملابس شفافة تشف عما وراءها ، أو لبسن ملابس ضيقة تحدد أعضاءهن ، أو داعبن الطلاب أو الأساتذة ومزحن معهم أو نحو ذلك مما يفضي إلى انتهاك الحرمات والفوضى في الأعراض
বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদানকালীন ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকার সহাবস্থান হারাম। কেননা, এটি ফেতনা, অবাধ যৌনতা ও অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে। এক্ষেত্রে যখন শিক্ষিকারা কিংবা ছাত্রীরা নিজেদের সতরের কোনো অংশ খোলা রাখে কিংবা অন্যের সামনে পিনপিনে পোশাক, অঙ্গভঙ্গী প্রকাশক আঁটসাঁট জামা পরিধান করে কিংবা তারা যখন ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্রা ইত্যাদি করে তখন পাপাচার আরো বৃদ্ধি পায় এবং অপরাধ আরো বিশাল হয়ে ওঠে; যা সম্ভ্রমহানি ও ইজ্জত লুণ্ঠন পর্যন্ত গড়ায়। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১৭/৫৩) সুতরাং সর্বতোভাবে একে পরিহার করার চেষ্টা করতে হবে। ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে এবং পড়াবে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء
নারী আসক্তি মানুষের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে। (সূরা আলি ইমরান ১৪) হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন-مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ
আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৮০৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭৪০) ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك
সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিভাবকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم